জুলাই মাসের কোটা আন্দোলন, যা পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রূপ নিল, তার মূল কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলার পর ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ ঘটে, ফলে প্রশাসন ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করে। ১৭ জুলাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা শহীদদের গায়েবানা জানাজা পড়ানোর ঘোষণা দিলেও পুলিশের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। তবে আন্দোলনের সমন্বয়করা থেমে থাকেননি।
ওইদিনই কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে এবং সন্ধ্যার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ছাড়তে নির্দেশ দেয়, কিন্তু আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে থাকে। পুলিশ ছাত্রদের ক্যাম্পাস ছাড়তে বললে, ছাত্ররা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। তারা পুলিশের প্রতি বলেছিল, “ক্যাম্পাস আমাদের, আপনাদের এখানে থাকার অধিকার নেই, আপনারাই ক্যাম্পাস থেকে চলে যান।”
এই প্রতিবাদ, যা তখনকার বিপ্লবের এক অংশ, বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ পুলিশদের বলতে শুনছিলেন, “আপনি যান গে! আপনি যান!”
আরেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার তখন বলেছিলেন, “এই ক্যাম্পাস আমাদের, আপনি এখানে কে?” জুলাই বিপ্লবের প্রায় ৪ মাস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তখনকার এই বাক্যগুলো আর শুধু শব্দগুচ্ছ ছিল না, তা হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের এক শক্তিশালী ভাষা, যা লাখ লাখ মানুষকে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে।