কয়েক বছর আগে অমিতাভ রেজা চৌধুরী মোশাররফ করিমকে একটি গল্প শোনান, যা শুনে অভিনেতার মনের মধ্যে দানা বেঁধে যায়। প্রায় সাত বছর ধরে সেই গল্পটি মনের মধ্যে লালন করার পর, সম্প্রতি হইচইয়ের ওয়েব সিরিজ ‘বোহিমিয়ান ঘোড়া’–র শুটিং শুরু হয়েছে, আর এখন মোশাররফ সেই “ঘোড়া”-র পেছনেই ছুটছেন। তিনি জানিয়েছেন, “এমন ধরনের চরিত্রে আগে কখনও কাজ করিনি। এটি একটি অসাধারণ গল্প, যার জন্য আমি অপেক্ষা করতাম। এই চরিত্রে বহু রূপে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন। নতুনভাবে ফিরছি—এবার আমি মানসিকভাবে বিভিন্ন রূপে নিজেকে তুলে ধরব, চুল, দাঁড়ি বা বেশভূষায় নয়।”
বাংলা নাটক, সিনেমা কিংবা ওটিটিতে নানা রূপে নিজেকে তুলে ধরেছেন মোশাররফ করিম। তবে তিনি মনে করেন, বারবার কি একই ধরনের চরিত্রে ফিরতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, “চরিত্রের কখনো শেষ হয়?” তিনি আরও বলেন, “একজন শিল্পী যদি তার চরিত্রের মধ্যে নতুনত্ব না আনে, তবে সেই সত্তা কি টিকে থাকবে? আমি নতুন চরিত্রে বারবার আসতে চাই, কারণ প্রতিটি আলাদা চরিত্র আমাকে নতুনভাবে উত্সাহিত করে। যদি অভিনয়ে আনন্দ না পাই, তবে তা কখনও শিল্প হয়ে উঠবে না।”
মোশাররফ করিম জনপ্রিয়তার পিছনে কখনোই ছুটেন না। তিনি বলেন, “আমার কাছে সব কাজই প্রিয়, তবে আমি আগে চরিত্র বাছাই করি। যদি চরিত্র ভালো না লাগে, তবে কাজ করা কঠিন হয়ে যায়। আমি কাজ করি গল্পের জন্য, আলোচনায় থাকার জন্য নয়।”
অভিনয়ের ক্ষেত্রে কিছু সময় তাকে ছাড় দিতে হয়েছে, কিন্তু এখন আর তিনি তা চান না। শুটিংয়ে চরিত্রের জন্য সময় দিতে পারলেই তিনি খুশি। তবে মাঝে মাঝে পরিচালক বা ইউনিটের কারণে ছাড় দিতে হয়, যা তাকে খুবই কষ্ট দেয়। তিনি বলেন, “কখনো কখনো পরিস্থিতির কারণে আমাকে ছাড় দিতে হয়, তখন মন খারাপ হয়ে যায়।”
এছাড়া, চরকির ওয়েব সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’-এ কাজ করার আগে মোশাররফ করিমকে কখনোই হরর নাটকে দেখা যায়নি, তবে তিনি বলেন, “ভৌতিক গল্প সব সময়ই আমাকে টানে, তবে প্রস্তাব খুব কম আসত। এবার যখন প্রস্তাব এল এবং চরিত্রটি পছন্দ হলো, তখন সাদরে রাজি হয়ে গেছি।”
এখন নাটক, ওটিটি এবং সিনেমার কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত মোশাররফ। শিগগিরই ঈদের কাজগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন। কলকাতায় ‘হুব্বা’ সিনেমার মাধ্যমে আলোচনায় আসা এই অভিনেতা মুক্তির অপেক্ষায় থাকা বেশ কিছু সিনেমার কাজ শেষ করেছেন, যেমন: ‘বিলডাকিনী’, ‘চক্কর ৩০২’, ‘বৈদ্য’। তিনি বলেন, “কিছু সিনেমার কাজ অনেক আগে শেষ করেছি, কিন্তু মাঝে মাঝে ভাবি, কেন এতো সময় অপেক্ষা করতে হয়?”