মানিকগঞ্জে, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও আইনজীবী মেজবাউল হক বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষে জামিন শুনানি করায়। গণমাধ্যমে এই খবর প্রচারিত হওয়ার পর আদালত পাড়ায় গুঞ্জন শুরু হয় এবং বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মেজবাউল হক দাবি করেন, পৌরসভা নির্বাচনে তার প্রার্থীতাকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১২৯ জন আসামীর মধ্যে ৬ জন আত্মসমর্পণ করলে, দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম আজিজুল হক, ধামশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেনকে আদালত জামিন দেয়। অপরদিকে, দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন, জিয়ানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন এবং বাঘুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আখিনুর রহমানকে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মেজবাউল হক বলেন, তিনি বিএনপির প্যানেল থেকে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যে দুই আওয়ামী লীগ নেতাদের জামিন শুনানি করেছেন, তারা সিনিয়র আইনজীবী এবং গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তাই বার কাউন্সিল অ্যাক্ট অনুযায়ী মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করেছেন।
মেজবাউল হক অভিযোগ করেন যে, তিনি যে মামলায় জামিন শুনানি করেছেন, সেই মামলায় জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতারাও নিম্ন আদালতে শুনানি করেছেন। কিন্তু তাদের সমালোচনা না হলেও, একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার জামিন শুনানিকে রাজনৈতিকভাবে প্রচার করছে, যা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অংশ।
তিনি আরও বলেন, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এমন মামলার প্রচারণা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
মেজবাউল হক এ ধরনের চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি দলীয়সহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে এ বিষয়ে কথা বলবেন এবং আইনজীবী ফোরাম ও দলীয় হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে সঠিক বিচার চাইবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন কচি মন্তব্য করেন যে, সমাজে এমন দৃষ্টান্তই ভীতির জন্ম দেয়। আইনগত অধিকার সকল নাগরিকের আছে এবং এখানে রাজনীতি মুখ্য নয়। অপরাধের ধরণ দেখে অপরাধীর বিচার করবে আদালত। বিএনপিপন্থি আইনজীবী যা করেছেন, তা সহকর্মীর প্রতি দায়িত্ববোধ বা কর্তব্য এবং এটি তার পেশা।