আমাদের ফুসফুস অনবরত কাজ চালিয়ে যায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক জিনিস নীরবে ফুসফুসের ক্ষতি করে, কিন্তু সেই ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি না হওয়া পর্যন্ত তা আমাদের চোখে পড়ে না।
যে কারণে আমাদের বেশিরভাগই ফুসফুসের যত্ন নিতে শুরু করি না যতক্ষণ না আমরা সিঁড়িতে সহজেই উঠতে শুরু করি, শ্বাসকষ্ট, কাশি বা হাঁপাতে থাকি।
দূষণের চেয়ে কিছু দৈনন্দিন জিনিস ফুসফুসের বেশি ক্ষতি করে!
আপনি জেনে অবাক হতে পারেন যে কেবল ধূমপান বা ভারী দূষণই আমাদের ফুসফুসের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না। এমন অনেক দৈনন্দিন জিনিস রয়েছে, যেগুলোতে আমরা মনোযোগও দিই না, সেসবই নীরবে আমাদের শ্বাসযন্ত্রের শক্তিকে প্রভাবিত করে।
তবে আশার কথা হলো যে, বাড়িতে ছোট এবং নিয়মিত পরিবর্তন আমাদের ফুসফুসকে রক্ষা করতে পারে। কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে ঘরোয়া প্রতিকার এই কাজে সহায়তা করতে পারে।
ঘরের ভেতরের বায়ু দূষণ
আমাদের বেশিরভাগই মনে করে দূষণ মানে বাইরের জিনিসপত্র যেমন ট্র্যাফিক ধোঁয়া, কারখানার ধোঁয়া, ধুলা ঝড় ইত্যাদি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, আপনার ঘরের বাতাস কনো কখনো বাইরের চেয়ে বেশি বিষাক্ত হতে পারে? অনেক বাড়িতে আগরবাতি, ধুপ জ্বালানো হয়; মশার কয়েল, স্প্রে, রাসায়নিক ক্লিনার এবং অ্যারোসল-ভিত্তিক রুম ফ্রেশনার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেইসঙ্গে গৃহসজ্জার সামগ্রী, পোষা প্রাণির ইত্যাদিও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
এই সবই একটি বিষাক্ত ককটেল তৈরি করে যা আপনার ফুসফুসকে দিনের পর দিন ক্ষতিকর নিঃশ্বাস নিতে বাধ্য করে। এবং সবচেয়ে খারাপ দিক হলো, আমরা মনে করি আমরা আমাদের ঘরের ভেতরে নিরাপদ। যদি আপনি কোনো কারণ ছাড়াই শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন বা গলা ব্যথা বা নাক বন্ধ করে ঘুম থেকে ওঠেন, তাহলে অবাক হবেন না – আপনার ঘরের ভেতরের বাতাসই হতে পারে খলনায়ক।
রান্নাঘরের ধোঁয়া
বিভিন্ন পাত্রে রান্না করার ফলে সূক্ষ্ম কণা এবং গ্যাস তৈরি হয় যা শ্বাসনালীকে জ্বালাতন করে। চিমনি বা এক্সজস্ট ফ্যান ছাড়া এই ধোঁয়া রান্নাঘরে এবং এমনকী পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে যায়। যদি কখনো কিছু ভাজার সময় কাশি শুরু হয় বা ডিপ-ফ্রাই করার সময় চোখ দিয়ে পানি পড়েন, তবে বুঝবেন আপনার ফুসফুস সেই ধোঁয়ার জ্বালাপোড়ার প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
সারাদিন বসে থাকা
আমরা জানি সারাদিন বসে থাকার ফলে আমাদের পিঠ এবং ওজনের ওপর প্রভাব পড়ে, কিন্তু আপনি কি জানেন এটি ফুসফুসের উপরও প্রভাব ফেলে? যখন খুব বেশি সময় ধরে বেশিক্ষণ নড়াচড়া না করে বসে থাকেন, তখন শ্বাস-প্রশ্বাস অগভীর হয়ে যায়। এর অর্থ হলো, ফুসফুস সম্পূর্ণরূপে প্রসারিত হওয়ার বা পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করার সুযোগ পায় না। ধীরে ধীরে এটি ফুসফুসের স্থিতিস্থাপকতা এবং শক্তি কমিয়ে দেয়।
আপনি এমন কার্যকলাপের সময় হাঁপাতে পারেন যা আপনাকে আগে কখনো বিরক্ত করেনি- যেমন সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা দ্রুত হাঁটা। এর মানে যে কেবল আপনার স্ট্যামিনা কমে যাচ্ছে তা না, এটি আপনার ফুসফুসের ক্ষমতা কমে যাওয়ারও প্রকাশ।