বিজিবির মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, “আমি সিইও হিসেবে জিরো লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলে আপনাদের সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি বিএসএফকে সামলানোর জন্য যথেষ্ট।”
তিনি আরও বলেন, “যখন প্রয়োজন হবে, তখন আমি আপনাদের ডাকব। গ্রামবাসীকে নিয়ে আসতে বলব। কিন্তু আমি না ডাকলে আপনারা বর্ডারে ভিড় করবেন না এবং আমাদের কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করবেন না।”
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাখোরালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, “আমাদের হাতে অস্ত্র, ট্রেনিং এবং পর্যাপ্ত মনোবল রয়েছে। আমাদের পেছনে ১৮ কোটি মানুষ আছে, তাই ভয়ের কোনো কারণ নেই। যখন বিজিবি শূন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবে, তখন বর্ডারের নিরাপত্তা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত থাকবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে আপনারা বিজিবিকে পাশে পাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “বর্ডার এলাকার শূন্য লাইন পেরিয়ে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিরাই ভারতে প্রবেশ করে। আমার দুই বছরের দায়িত্বকালে কখনো দেখিনি ভারতীয় কৃষক শূন্য লাইন অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকেছে। ভারতীয় চোরাকারবারিরাও বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে না, এবং আপনারাও এটি দেখেননি।”
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেন, “জেলায় ভারতীয় ফেনসিডিল ও চোরাই মোবাইল ফোনে সয়লাব হয়ে গেছে। তাই আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞা করি—মাদক আমরা খাব না বা ব্যবহার করব না, এবং ভারতীয় চোরাই মোবাইল ফোন কিনব না বা ব্যবহার করব না। আগে আমাদের নিজেদের ঠিক হতে হবে।”
লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, “৫০০ টাকার বিনিময়ে আপনি ভারত থেকে এক কেস ফেনসিডিল আনতে সীমান্তে গেলেন। এরপর যদি বিএসএফের গুলিতে আহত বা নিহত হন, তাহলে ক্ষতি কার হলো? ৫০০ টাকার জন্য নিজের জীবন দেবেন? যদি জীবন দিতেই হয়, তাহলে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য দিন। আর যদি আহত হতেই হয়, তাহলে দেশ রক্ষার জন্য হন। তাই ভারতীয় মাদক ও চোরাচালান পণ্য আমরা আনব না এবং যারা আনবে, তাদের প্রতিরোধ করব।”
তিনি গ্রামবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “সবশেষে আমি চৌকা ও কিরণগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আপনারা সবসময় বিজিবির পাশে ছিলেন। শুধু শিবগঞ্জবাসী নয়, পুরো দেশের ১৮ কোটি মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে।”
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজহার আলী, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া, এবং শাহবাজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক প্রমুখ।