দেশের অর্থনীতি জুলাই-আগস্টের সংকোচনের পর সেপ্টেম্বরেও অব্যাহত ছিল, তবে অক্টোবর মাসে অর্থনীতি সম্প্রসারণের পথে ফিরেছে। ওই মাসে, সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) সূচক ৫৫.৭ পয়েন্টে পৌঁছেছে।
এ পিএমআই সূচক গতকাল প্রকাশিত হয়েছে, যা প্রতি মাসে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) যৌথভাবে প্রকাশ করে। এটি দেশের কৃষি, উৎপাদন, নির্মাণ এবং সেবা খাতের গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়।
যতটুকু জানা যায়, এই সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে অর্থনীতি সংকোচন বা ধীরগতিতে চলে, এবং তিন মাস ধরে পিএমআই ৫০-এর নিচে ছিল। তবে অক্টোবরে পিএমআই সূচক ৫০-এর ওপরে উঠে এসেছে, যা অর্থনীতির ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
অক্টোবর মাসে কৃষি খাতের পিএমআই ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫৩ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যেখানে সেপ্টেম্বর মাসে এটি ছিল ৪৭। উৎপাদন খাতের পিএমআই ৫৬.৬ পয়েন্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, যা সেপ্টেম্বরের ৫২.৬ পয়েন্টের তুলনায় বেশ ভালো উন্নতি। নির্মাণ খাতের পিএমআই ৪৬ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৫০.১ পয়েন্টে পৌঁছেছে, এবং সেবা খাতের পিএমআই ৪৯.৪ থেকে ৫৬.৯ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এটি প্রথমবারের মতো, গত চার মাসে সব খাত একসঙ্গে সম্প্রসারণের দিকে অগ্রসর হয়েছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে পিএমআই মান ৫৫.৭ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।
এমসিসিআই ও পিইবি ডিসেম্বরে পিএমআই সূচক প্রকাশ করা শুরু করে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এটি জনসম্মুখে আনা হয়। এর আগেও অর্থনীতি সম্প্রসারণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তবে মে মাসে পিএমআই সূচক রেকর্ড ৭০.১ পয়েন্টে পৌঁছানোর পর তা কমে গিয়ে জুলাইয়ে ৩৬.৯ পয়েন্টে নেমে যায়। সেই সময় দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রভাবে সব খাতেই ধস নামে। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে, এবং অক্টোবর মাসে এটি ৫৫.৭ পয়েন্টে ফিরে এসেছে।
অক্টোবর মাসের পিএমআই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো সম্প্রসারণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে এখনো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ যেমন ঘন ঘন প্রতিবাদ, আইন-শৃঙ্খলার মন্থর উন্নতি এবং জনপ্রশাসনের ধীরগতি ইত্যাদির কারণে অর্থনীতি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।