মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে তাকে হোয়াইট হাউস সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও, ট্রাম্প তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইসরায়েলের প্রতি তার সমর্থন ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে চিঠি দিয়ে হোয়াইট হাউস সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আইসিসি গত বছরের নভেম্বরে জানায়, নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট এবং হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যা ২০২৩ সালের অক্টোবর হামাসের হামলার পর সংঘটিত হয়।
ইসরায়েল দাবি করেছে যে, হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফকে তারা গত জুলাইয়ে হত্যা করেছে, কিন্তু তার জীবিত অবস্থান এখনো নিশ্চিত নয়। তবে, নেতানিয়াহু, গ্যালান্ট এবং দেইফের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং আইসিসি সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনি বাধ্যবাধকতার আওতায় থাকবে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে মন্তব্য করেছেন।
আইসিসি জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এতে গাজার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে ক্ষুধা ব্যবহারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ওপর আক্রমণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এদিকে, নেতানিয়াহু আইসিসির পরোয়ানাকে পাশ কাটিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন, এমন সময় যখন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চলমান। যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সাময়িক অবসান ঘটেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সোমবার তার সরকারি বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি চান মিসর গাজার ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিক, কারণ সেখানে বেশিরভাগ মানুষ ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।
হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকে গাজায় ব্যাপক তাণ্ডব শুরু হয়। ইসরায়েলের দাবি, হামাসের হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। অন্যদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যদিও ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করছে।